কক্সবাজারে কোট হাজতের তিন পুলিশ বরখাস্ত

বিশেষ প্রতিবেদক :

কক্সবাজারের কোট হাজতের তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে। সেই সাথে কোর্ট পরিদর্শককে কারন দর্শাতে বলা হয়েছে। বহিঃস্কৃত পুলিশ সদস্যরা হচ্ছে সহকারী পুলিশ পরিদর্শক (এ.টিএসআই) যথাক্রমে একরামুল হক, মনিরুল ইসলাম এবং নুরুল ইসলাম। পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অনিয়ম দুর্নীতির কারনে এই তিন পুলিশকে বরখাস্ত করা হয় এবং কোর্ট পরিদর্শককে বলা হয় কারন দর্শাতে। গতকাল ২১ জুন পুলিশ সুপার এ আদেশ দেন। দৈনিক আজকের দেশবিদেশ পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের জের ধরে তিন পুলিশ সদস্যকে বরখাস্ত ও পুলিশ পরিদর্শককে কারন দর্শাতে বলা হয়।

উল্লেখ্য গত ১৯ জুন দৈনিক আজকের দেশবিদেশের সূত্র ধরে কক্সবাজার জার্নাল ডটকমে প্রকাশিত হয় ‘আদালতের হাজতখানায়ও ইয়াবা কারবারীদের বিশেষ কদর: রমরমা দুর্নীতি ও পুলিশ ব্যারাকে এমপি বদির ভাই শুকুর’ বিষয়ক সংবাদ।

উক্ত সংবাদে বলা হয়, কক্সবাজারে ইয়াবা কারবারিদের নিয়ে কেবল জেলা কারাগারে নয়, আদালত হাজতখানায়ও চলছে রমরমা বাণিজ্য। বিশেষ করে কক্সবাজারে আটক আতœসমর্পণ করা ১০২ জন ইয়াবা কারবারিদের নিয়েই পুলিশ ও কারারক্ষীরা বাণিজ্যে নেমেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। জেলা কারাগারে কারবারিদের থাকা-খাওয়া থেকে শুরু করে পদে পদে যেমনি দুর্নীতি চলছে তেমনি আদালতের হাজতখানা কেন্দ্রিক দুর্নীতির চিত্র আরো ভয়াবহ বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে, কক্সবাজারের আদালত হাজাতে আনা হাজতি আসামীদের নিয়ে পুলিশ সদস্যরা নানা দুর্নীতিতে জড়িত রয়েছে। হাজতখানা থেকে বের করে স্বজনদের সাথে আলাপের সুযোগে আদায় করা হয় বিপুর অংকের টাকা। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ আসামী যথা আতœসমর্পণ করা ১০২ জন ইয়াবা কারবারির মত দুর্ধর্ষ আসামীদের নিয়ে এরকম অবৈধ সুযোগ সুবিধা দিতে গিয়ে বড় ধরণের দুর্ঘটনারও শংকা করা হচ্ছে। যেমন জঙ্গি আপহরণের মত ঘটনারও নজির রয়েছে এখানে।

কক্সবাজারের আদালত হাজতখানায় প্রতিদিন গড়ে অর্ধ শতাধিক হাজতি আসামী জেলা কারাগার থেকে চলমান মামলায় উপস্থিতির জন্য আনা হয়। এসব হাজতি আসামীদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক থাকেন ইয়াবা কারবারি। আবার হাজতি কারবারিদেরও সাথে থাকেন আতœসমর্পণ করা ১০২ জনের বড় বড় গডফাদারগণ। বিভিন্ন আদালতের পরোয়ানা নিয়ে তাদের করাগার থেকে আনা হয় আদালতে। আতœসমর্পণ করা ১০২ জন ইয়াবা কারবারিদের নিয়ে যাতে আইন শৃংখলা পরিস্থিতির কোন ব্যত্যয় না ঘটে সেজন্য কারাগারে ও আদালতের হাজত খানায় বিশেষ নজরদারির তাগিদ থাকা সত্বেও এসবের কোন তোয়াক্কাই করা হচ্ছে না।

গত মঙ্গলবার জেলা কারাগার থেকে আদালতে আনা হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকায় ৩ নম্বরে থাকা ইয়াবা ডন টেকনাফের সাবেক এমপি আবদুর রহমান বদির ছোট ভাই আবদুস শুকুর। ইয়াবা ডন শুকুরকে আদালতের হাজতখানায় আনার পর থেকেই টেকনাফ সীমান্তের ইয়াবা কারবারিরা তার সাথে সাক্ষাৎ করতে মরিয়া হয়ে পড়ে। আর এমন সুযোগও হাতছাড়া করতে রাজি নয় কক্সবাজার আদালতের হাজতখানার দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা।

মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিন দেখা যায় ইয়াবা ডন আবদুস শুকুরকে হাজতখানা থেকে বের করে পার্শ্বের্¦র পুলিশ ব্যরাকে নিয়ে যেতে। ব্যরাকের একটি বিছানায় বসে লাল গেঞ্জি পরিহিত হাতকড়া লাগানো ইয়াবা ডন আবদুস শুকুর আলাপে বসেন তারই ফুফা এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তারিকাভুক্ত অপর কারবারি হায়দার আলী ও অপর একজনের সাথে।

তালিকা ভুক্ত কারবারি হায়দার আলীর পুত্র কামরুল হাসান রাশেদও একজন তালিকাভুক্ত কারবারি। আতœসমর্পণ করা ১০২ কারবারির সাথে কামরুর হাসান রাশেদও রয়েছেন।